07 July, 2025

সংখ্যায় নাকি টাকার অংকে ঘুষের হিসাব? মীর আব্দুল আলীম

September 17, 2024 | 17 ভাদ্র 2024

মীর আব্দুল আলীম

Article Image

সংখ্যায় নাকি টাকার অংকে ঘুষের হিসাব?

মীর আব্দুল আলী

মhttps://sarabangla.net/opinion/free-opinion/post-719618/

ঘুষ-দুর্নীতি রেড়েছে তা কখন বলা চলে- যদি অনেক বেশি লোক ঘুষ নেয়, নাকি যদি অনেক বেশি টাকা ঘুষ দিতে হয়? সংখ্যায় নাকি টাকার অংকে ঘুষের হিসাব? যেদিক দিয়েই হিসাব করি এদেশে ঘুষ-দুর্নীতি কমেনি, বেড়েছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা সংস্থা, পাসপোর্ট, বিআরটিএ, ভূমি অফিসে, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, পুলিশ স্টেশন, আদালত পাড়া থেকে শুরু করে সবখানেই অনেকটা রাগঢাকা না রেখে ঘুষ গ্রহণ চলছে। ঘুষ দেয়া বা নেয়া বর্তমান সমাজে এক অনিবার্য বিধান যেন। ঘুষহীনতা মানেই এখন অস্বাভাবিক কিছু। ঘুষহীন অবস্থাটা সেবা না পাবার আশংকা তৈরি করে। ঘুষ আপনার যোগ্যতাকে শক্ত করে সব কাজের রসদ তৈরি করে। কেবল ঘুষগ্রহীতা ঘুষ গ্রহনে আত্নপ্তি পান কেবল তা নয়; যিনি ঘুষ দিচ্ছেন তিনিও যেন এক পরম শান্তি পাচ্ছেন। কারন ঘুষ দিতে পারা মানেই কাজটে ভালোয় ভালোয় হয়ে গেল কিংবা চাকুরিটা মিলে গেল। ঘুষের শক্তি অনেক! এটাই এখন স্বাভাবিক; উল্টো ঘুষহীন দিন অস্বাভাবিক হয়ে গেছে এদেশে। যত হয়রানী তত ঘুষের অংক বাড়ে। তাই অনেক অফিসে অহেতুক লম্বা লাইনে দাঁড়ানো কিংবা কাজের সিরিয়াল থাকে। বিশেষ করে পাসপের্ট অফিস আর বিআরটিএতে এ দৃশ্য কমন। কাজের ব্যপ্তি অনুসারে ঘুষের পরিমানের নির্ধারিত কোন কোন দপ্তরে।

 

 

বিজ্ঞাপন

সেবা প্রাপ্তি নাগরিক অধিকার। এ অধিকার অনেকটাই হরণ করা হয়েছে ঘুষ-দুর্নীতি। এক পরিসংখ্যান বলছে, ঘুষের পরিমান অনেক বেড়েছে তা বছরে ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। ঘুষ-দুর্নীতি সংখ্যায় কিছুটা কমেছে, টাকার পরিমানে বেড়েছে অনেক। কাজ উদ্ধার করতে রাষ্ট্রের ছোট মাপের নানা কর্তাকে ঘুষ দিতে হয়, তা হলে মনে হয়, দুর্নীতি তো আরও বেড়ে গেল! কিন্তু বড় কর্তা বাবুরা, মন্ত্রী-আমলাদের দফতরে বন্ধ দরজার পিছনে যে সব রফা হয়, সেখানে বহু কোটি টাকার অপচয় কেউ টেরও পায় না। দুর্নীতি বেশি চোখে পড়া মানেই দুর্নীতি বেড়ে যাওয়া, এমনটা বলা তাই সহজ নয়। এ দেশে মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ হাত পেতে দাঁড়িয়ে থাকে, কুচকে-মুচকে ২০-৫০টাকা গ্রহণ করে এটা ঘুষ। আর টেবিলের নিচে, ব্যাংক টু ব্যাংক কোটি কোটি টাকার লেনদেন এটাও অপ্রকাশিত ঘুষ। আমাদের দেশে লোকে ঘুষ দেয় যাতে সুবিধেমতো আইন ভাঙতে পারে। সহজে মানুষ ঘুষ দিতে পারে তাই দেশে আইনও ভঙ্গ হয় বেশি। আবার ন্যায্য সেবা পেতে জনগণকে ঘুষ দিতে হয়।

 

 

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রের জনগণকে সেবা পেতে হয় যদি ঘুষের বিনিময়ে, এর চেয়ে কষ্টের আর কি হতে পারে। সরকারি ও বেসরকারি খাতে যেভাবে দুর্নীতির প্রসার ঘটছে তা নি:সন্দেহে উদ্বেগজনক। ঘুষ, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, লুটপাট, জালিয়াতি বেড়েই চলছে। প্রতিদিন নানা ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রচুর অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

 

দুর্নীতি বাড়ছে তাই এখনই জনগণের সেবা খাতকে নির্ঝঞ্জাট ও দুর্নীতিমুক্ত রাখা জরুরি হয়ে পরেছে। দুর্নীতি যে বাড়ছে সাদা চোখেই তা দৃশ্যমান। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি কমিয়ে আনার প্রয়াস থেকেই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রায় দ্বিগুণ করেছেন। সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করেছেন। এটা নি:স্বন্দেহে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদইচ্ছা। ঘুষ ও দুর্নীতি কমাতে সচিবদের বারংবার বিশেখ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘পে-স্কেলে বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন যেহারে বেড়েছে, তা বিশ্বে বিরল। তাই জনগণ যেন সেবা পায় সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।’

 

সেবা খাতের কোথাও দুর্নীতি কমেছে এমন কথা শোনা যায়নি। বরং ভুক্তভোগীদের মুখে সেবা খাতের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাশাপাশি জোর করে ঘুষ আদায় করার অভিযোগও কমেনি। সেবা খাতের ভুক্তভোগী মাত্রেই জানেন, ঘুষ ছাড়া সেবা পাওয়া প্রায় অসম্ভব। দুর্নীতির এই চিত্র যে কতোটা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, তার উদাহরণ উঠে এসেছে টিআইবি’র চলতি প্রতিবেদনে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের (টিআইবি) ‘সেবা খাতে দুর্নীতির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘুষ ছাড়া সেবা প্রাপ্তি এখন প্রায় দুরূহ।

 

পৃথিবীর সবদেশেই কম বেশি দুর্নীতি আছে, ঘুষের রেওয়াজ আছে। এই কথাটির আপেক্ষিক সত্যতা মেনে নিয়েও, বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থায় দুর্নীতির ব্যাপকতাকে অস্বীকার করার কোনো অজুহাত নেই। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যে, এই দুর্নীতি জনগণের মনে ব্যাপক হতাশাবোধের জন্ম দিয়েছে। এই হতাশাবোধের মূল কারণ হচ্ছে যে, দেশের রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কার্যকর ভূমিকা থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যত্রুম জনগণকে আশ্বস্ত করতে পারছে না। একটি গণতান্ত্রিক এবং স্বাধীন সমাজ ব্যবস্থার প্রধানতম ভিত্তি হওয়ার কথা এসব প্রতিষ্ঠানের। আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অগ্রগণ্য হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা, সংবাদ মাধ্যম, সরকারি ও বেসরকারি আমলাতন্ত্র, জাতীয় সংসদ, সরকারি ও বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং ব্যক্তি খাত। আমরা বিগত কয়েক দশক ধরে এসব প্রতিষ্ঠানকে ক্রমে ধ্বংস বা অকার্যকর করার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে চালিত করেছি।

 

সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে যে মূল উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে দুর্নীতি। ক্ষুদ্র থেকে বৃহত্তর প্রতিটি সেক্টরই যেন ছেয়ে গেছে দুর্নীতি ও ঘুষের অভিশাপে। ঘুষ ছাড়া কোন কিছুই মিলেনা। দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) দেশের ১৬টি গুরুত্বপূর্ণ সেবা খাতের ওপরে জরিপ করে দুর্নীতি ও ঘুষের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার প্রশাসন, ভূমি, কৃষি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, বিচারিক সেবা, বিদ্যুৎ, ব্যাংকিং, বিআরটিএ, কর ও শুল্ক, এনজিও, পাসপোর্ট, বীমা, গ্যাস সেবা খাতে এই জরিপ করে টিআইবি।

 

জরিপে বলা হয়, দেশের ৮৯ শতাংশ মানুষ মনে করেন, ঘুষ না দিলে কোনো সেবা খাতে সেবা মেলে না। জরিপের তথ্য মতে, গত বছর সার্বিকভাবে ঘুষের শিকার (ঘুষ দিতে বাধ্য) হওয়া খানার হার ৪৯ দশমিক ৮ শতাংশ। উল্লেখিত বিষয়ে সারা বছরই কম বেশি ঘুষ বাণিজ্য চলে। কিন্তু সরকারের শেষ সময়ে এ ধরণের তদবির বেশি করা যায় বলে সচিবালয়সহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে এখন তদবিরকারকদের জমজমাট আনাগোনা বিরাজ করছে। আবার এসব কাজকে কেন্দ্র করে একশ্রেণীর পেশাদার তদবিরবাজ চক্রও গড়ে উঠেছে। প্রশাসনে ঘুষ এখন সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য। বিশেখ করে চতুর্থ শ্রেণীর পদে লিখিত পরীক্ষা নেয়া বাধ্যতামূলক না হওয়ায় একেবারে তালিকা করে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে লোক নিয়োগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগের অন্ত নেই। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি প্রমাণ করা যায় না বলে সংশ্লিষ্টরা একেবারে বেপরোয়া। এছাড়া কয়েকজন প্রভাবশালী সচিবের পিএসের দুর্ব্যবহার ও দুর্নীতিতে সংশ্লিষ্ট সচিবদের ভাবমূর্তি প্রশ্নর মুখে পড়েছে। তাকে নিয়ে রয়েছে দুর্নীতির অনেক মুখরোচক গল্প। দুর্নীতির এই সর্বগ্রাসী থাবা থেকে কীভাবে মুক্ত হওয়া যায়?

 

এই প্রশ্নর উত্তর দিতে গেলে আমাদের বুঝতে হবে যে কেন দুর্নীতি হয় বা দুর্নীতি বিস্তারের প্রক্রিয়া কীভাবে বৃদ্ধি পায়। সার্বিকভাবে দেখলে দুর্নীতির ব্যাপকতার সাথে নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের একটি সম্পর্ক আছে। একথার সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে বলতে হয় যে, কেবল মূল্যবোধের অবক্ষয় বাংলাদেশের দুর্নীতির ব্যাপক প্রসারের প্রক্রিয়াকে ব্যাখ্যা করতে পারে না। বাংলাদেশে দুর্নীতির ব্যাপকতা জনগণের মনে যে পরিমাণ হতাশার সৃষ্টি করে তা তুলনাহীন। দুর্নীতি কেবল ওপর মহলে হয় তাই নয় বরং দৈনন্দিন জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে জনগণকে দুর্নীতির প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে বাধ্য করা হয়। এই অংশগ্রহণের কারণ সব ক্ষেত্রেই শুধু লোভ নয় বরং অনেক ক্ষেত্রেই হচ্ছে ন্যূনতম জীবন-যাপনের প্রচষ্টা। এই অসহায়ত্বের সাথে যুক্ত হয়েছে চোখের সামনে ঘটে যাওয়া দৃষ্টান্তের, যেখানে দুর্নীতির সাথে সংশ্লিষ্টদের শাস্তির সুযোগ নেই বরং জনগণকে মূল্য দিতে হয় সৎ থাকার জন্য। জনগণের কাছে এই ধারণা ক্রমেই দৃঢ় হয়েছে যে, সমাজে নীতিবান হয়ে থাকার মাঝে কোনো গৌরব নেই বরং আছে বহু ভোগান্তি। সমাজের সুশীল অংশেও ন্যায়-অন্যায়ের সংজ্ঞা পরিষ্কার নয়। অন্যদিকে বেআইনি পথে থাকার সুবিধা রয়েছে অনেক। জনগণের মনে এই ধারণা যত ক্রমবিকাশমান হচ্ছে, হতাশা ততো বৃদ্ধি পাচ্ছে, সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা সম্পর্কে বিরূপতা ততো বেশি বেড়ে যাচ্ছে। এই হতাশার ফল ধরে আমরা হয়ে যাচ্ছি বছরের পর বছর দুর্নীতিতে শীর্ষস্থানীয় একটি দেশ। বাংলাদেশ একটি প্রধান দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ, এই ধারণাটি সৃষ্টি হয়েছে দেশের আমজনতার মনে, কারণ বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকর ভূমিকা পালনের অবকাশ রাখেনি। সমাজ ও রাষ্ট্রের এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যর্থতা দেশের জনগণের মনে তীব্র হতাশার সৃষ্টি করেছে, দুর্নীতির পথে ব্যাপক জনমত গড়ে তুলতে সৃষ্টি করেছে বাধা। যতদিন এই প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ভূমিকা কার্যকরভাবে পালন করতে পারবে না, সমাজে দুর্নীতির ব্যাপক দৌরাত্ম্যের প্রতাপ আমাদের দেখে যেতে হবে। দুর্নীতির যে ধারণা আমরা সৃষ্টি করেছি, সেই ধারণাকে বদলাতে হবে আমাদেরই। আর তা করতে হবে কথাকে কাজে পরিণত করার মাধ্যমে। বেশিরভাগ সময়েই যারা দুর্নীতি করেন তারা পার পেয়ে যান। দুর্নীতির অভিযোগ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমলে নেয়া হয় না, দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি শাস্তি পায় না, ফলে দুর্নীতি রোধ করাও সম্ভব হচ্ছে না।

 

এ অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। দুর্নীতি রোধে আইনের কঠেরতা বাড়াতে হবে। সর্বোপরি এ জাতীয় অপরাধে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধে বিভাগীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি প্রযাজ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। যা সম্প্রতি টিআইবির প্রতিবেদনে সুপারিশ আকারে পেশ করা হয়েছে। টিআইবির অন্যান্য সুপারিশও সুচিন্তিত ও সময়োপযোগী বলতে হবে। আমরা আশা করব, সরকার সংশ্লিষ্টরা টিআইবি কর্তৃক পরিচালিত জরিপের প্রতি নজর দিবেন এবং সংস্থাটির ১২ দফা সুপারিশমালা বাস্তবায়নে সচেষ্ট হবেন।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট

Related Articles

  • বিশুদ্ধ পানি বনাম প্রেক্ষিত বাংলাদেশ
  • The interim government has to focus on 5 issues
  • দেশে ঘনঘন ভূমিকম্প

Follow Us

More News

Updates
News Image

বিশুদ্ধ পানি বনাম প্রেক্ষিত বাংলাদেশ


মী র আব্দুল আলীম : <p><strong>বিশুদ্ধ পানি: এক�... ...বিস্তারিত


15 Sep, 2024
News Image

কলাম ঘুষহীন দিন অস্বাভাবিক যেন দেশে (২১ অক্টোবর, ২০২২ )


মী র আব্দুল আলীম : <p>ঘুষহীন দিন অস্বাভা�... ...বিস্তারিত


17 Sep, 2024
News Image

The interim government has to focus on 5 issues


মী র আব্দুল আলীম : <p><strong>The Interim Government Has to Focus on 5 Is... ...বিস্তারিত


15 Sep, 2024

© 2024 News Website. All Rights Reserved.